জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে।যদি নিজের প্রতিভার প্রতি তোমার আত্মবিশ্বাস না থাকে তাহলে কোন ভাবেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। নিজে খুঁজে নিতে হবে কোন বিষয় গুলো তোমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তলে এবং সেই পথ ধরেই এগিয়ে যেতে হবে।

ত্মবিশ্বাস মানে হল নিজের প্রতি বিশ্বাস। নিজের যোগ্যতার উপর বিশ্বাস। নিজেকে অন্যের কাছে তুলে ধরার প্রেরণা। স্বাধীনতা, স্বকীয়তা, উৎসাহ, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, সমালোচনার মুখোমুখি হওয়া, ইতিবাচক মনোভাবসব কিছুই গড়ে উঠে আত্মবিশ্বাসের চাকায়। আত্মবিশ্বাস আর ব্যক্তিত্ব একে অন্যের সাথে জড়িত। আত্মবিশ্বাসের অভাবে ব্যক্তিত্ব দৃঢ় হয় না


আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং প্রত্যেকের আত্মবিশ্বাস নির্ণয়ের পদ্ধতি ও কৌশল –নিজেকে জানার পাঠশালায় শেখানো হয়। আজ  ফলতার গল্প বলতে গেলে আমাদের সামনে অসংখ্য সফল ব্যক্তির নাম চলে আসে, যা কোনোভাবেই ২০ শতাংশের  ওপরে নয়। তাহলে কেন ৮০ শতাংশ মানুষ তার স্বপ্নের বা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে এসে থেমে যাচ্ছে বা সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা অংকুরেই শেষ হয়ে যাচ্ছে?

আত্মবিশ্বাস হচ্ছে আমার নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা, জ্ঞান, বিচার বা বুদ্ধির ওপর পূর্ণ আস্থা বা বিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস আমাদের সমগ্র জীবনকে ভালভাবে পরিবর্তন করতে পারে। কারণ এটা আমাদের নিজের ওপর বিশ্বাসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং শুধু ঝুঁকি নিতে শেখায় না বরং বাস্তবায়নের পথ বের করে দেয়।নিজেকে জানার পাঠশালার ক্লাসে এই বিষয়ে বিস্তারিত শিখানো হয়।

আত্মবিশ্বাসী হওয়ার গুরুত্ব

আত্মবিশ্বাস যেকোনো ব্যক্তিকে সবসময় দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করে আত্মবিশ্বাসীরা নিজেদের শক্তিমত্তা সক্ষমতার উপর দৃঢ় বিশ্বাসী হয় বলে তারা দ্রুত সিদ্ধান্তে আসতে পারে

আত্মবিশ্বাসী মানুষ সকলের আস্থা অর্জনে সক্ষম হন অন্যরা যখন দেখে কেউ খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে কোনো কাজ সম্পাদন করছে তখন তারা ব্যক্তির প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করে

আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করলে কাজটি নিখুঁত , নির্ভুল কার্যকরী হয় আত্মবিশ্বাসীরা অন্যদের সমালোচনাকে গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে তারা যে সিদ্ধান্ত নেয় তার উপর অটল থাকে এবং তা বাস্তবায়ন করে থাকে

ফলে অন্যরা তাদের সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকার কারণে যেকোনো কাজে আত্মবিশ্বাসীরা সহজেই সফলতা অর্জন করে আত্মবিশ্বাস অর্জনের উপায় শিক্ষা মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করে , পরিশীলিত করে শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ আত্মোপলব্ধির সুযোগ পায়

শিক্ষা মানুষকে তার পারিপার্শ্বিক সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে জানতে সহায়তা করে ফলে তারা আত্মবিশ্বাসী হওয়ার রসদ পায় আত্মবিশ্বাসী হওয়ার জন্য নিজের শক্তি সামর্থ্য সম্পর্কে জানতে হবে মানুষ তার জীবনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারে যে সে কোন বিষয়ে দক্ষ কোন বিষয়ে নয় যা সে ভালো বুঝে ভালো পারে তাই তার শক্তি সামর্থ্য

অর্থাৎ আমি কী করতে পারি বা কোন বিষয়ে আমার দক্ষতা বেশি সে বিষয়টি চিহ্নিত করতে হবে যে বিষয়ে আগ্রহ বেশি সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বা বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে এতে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে

কোনো কাজ করতে গিয়ে ভুল হলে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায় কী কী কারণে ভুল হলো তা চিহ্নিত করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী সময়ে কাজ করলে আর ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে না

আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হলে কোনো বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করা যাবে না কাজটি কঠিন বা এটা আমাকে দিয়ে হবে না রকম মনোভাব পোষণ করলে মনে সাহসের ঘাটতি দেখা দেয় , যার ফলে আত্মবিশ্বাস কমে যায় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে বিবেচনা করলে কোনো কাজই কঠিন মনে হবে না এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে

কঠিন মনে হবে না ক্যারিয়ার গঠনে আত্মবিশ্বাসের ভূমিকা যাদের আত্মত্মবিশ্বাস বেশি তারা লক্ষ্য নির্ধারণে সবসময় অগ্রগামী থাকে তারা ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে দৃঢ় মনোবলের সাথে তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে থাকে এবং লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট থাকে

কোনো ধরনের হীনমন্যতা অন্যের নেতিবাচক মন্তব্য তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ এবং লক্ষ্য অর্জন থেকে বিচ্যুত করতে পারে না অনেকে অল্প সময়ে লক্ষ্য অর্জনের স্বপ্ন দেখে থাকে কোনো কারণে লক্ষ্য পূরণে দেরি হলে তারা চমকে যায় , হতাশ হয়ে যায়

কিন্তু যারা আত্মবিশ্বাসী তারা দমবার পাত্র নয় তারা জানে , একদিন না একদিন সফলতা আসবেই , তাই তারা সর্বদা লক্ষ্যমুখী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে

আত্মবিশ্বাসীরা সবসময় সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে থাকে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণের জন্য তারা দৃপ্ত সাহসে বলীয়ান হয়ে বিভিন্ন কাজ করে থাকে ধরনের ব্যক্তিরা কখনো তাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয় না যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে হীনমন্যতা কাজের সফলতার পথে প্রধান অন্তরায়

আমি কাজ পারবো কিনা বা আমার দ্বারা হবে না কিংবা কাজ করলে কে কী বলবে ধরনের ভাবনাকে হীনমন্যতা বলে আত্মবিশ্বাসীরা হীনমন্যতাকে সহজে জয় করতে পারে ।নিজেকে জানার পাঠশালায় এই হীনমন্যতাকে কিভাবে কাটিয়ে উঠতে হবে তা শিখানো হয়। 

আত্মবিশ্বাসের গুরুত্বের একটি কিছু ভাল ধারণা -

আপনি যত বেশী আত্মবিশ্বাসী তত কম হতাশা অনুভব করবেন প্রত্যাখানে বানাশব্দে। হোক সেটা সামাজিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত জীবনে, কর্মক্ষেত্রে আমরানা’  শুনলেই ঘাবড়ে যাই, হতাশ হয়ে যাই, এমনকি নিজের দক্ষতা, যোগ্যতাকেও অবিশ্বাস করি শুধু আত্মবিশ্বাসের অভাবে।
আত্মবিশ্বাস মানুষকে ঝুঁকি নিতে শেখায়। যার ফলে আত্মবিশ্বাসীরা একের পর এক সুযোগের সম্মুখীন হন।
আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনও সমালোচনার দ্বারা প্রভাবিত হন না, বরং খারাপ সমালোচনাকে উপেক্ষা বা হাসির ছলে উড়িয়ে দেন।
আত্মবিশ্বাস মানুষকে অযথা উদ্বিগ্ন হতে বিরত রাখে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার কৌশল বের করতে সহায়তা করে।
ঈর্ষা মানুষকে ধ্বংস করে- এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এটা কি জানি একমাত্র আত্মবিশ্বাস মানুষকে ঈর্ষা থেকে বিরত রাখে।
আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না। হোক সেটা সামাজিক, ব্যক্তিগত বা কর্মক্ষেত্র বিষয়ক।

যে কোন সাফল্যের পূর্ব শর্ত হচ্ছে, পরিবর্তনকে গ্রহণ করা বা উন্নতির ধারায় সবসময় নিজেকে বেগবান রাখা। আমরা এটাও জানিযে কোনো পরিবর্তন বেদনাদায়ক বা চ্যালেঞ্জিং। আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পিছপা হন না। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের স্বপ্নের বা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে এসে থেমে যাওয়া বা সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা শুরুতেই শেষ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ আত্মবিশ্বাসের অভাব।